১৯৪১ সালের ২৬ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয়। লাহোরের ইসলামিয়া পার্কে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন ভারতের ধর্মীয় রাজনীতিক আবুল আলা মওদুদী । তখন দলটির নাম ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ বা জামায়াতে ইসলামী ভারত। পরের বছর জামায়াতের সদর দপ্তর লাহোর থেকে ভারতের পাঠানকোটে নেয়া হয়।
১৯৪৫ সালে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ এর প্রথম কনভেনশন হয় অবিভক্ত ভারতে এবং এর দু'বছর পর দেশভাগের আগ পর্যন্ত এই সংগঠনটি ১৯৪৭ সালে ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলো।
পাকিস্তান সৃষ্টির পর দলটির প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী ভারত থেকে পাকিস্তানে চলে যান। //
বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে ১৯৫৮ সালে অন্য সব দলের সাথে পাকিস্তানে জামায়াতের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করেন তখনকার সেনা শাসক আইয়ুব খান।
মুসলিম পারিবারিক আইন ও শিক্ষা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেয় দলটি।
বিশেষ করে মুসলিম পারিবারিক আইন নিয়ে তুমুল সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতাও তৈরি হয়। অধ্যাদেশের বিরোধিতার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতকে আবার নিষিদ্ধ করে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।
মওদুদী ও গোলাম আজমসহ অনেককে আটক করা হয়। একই বছরের অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ১৫১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র চারটি আসন পায় দলটি।
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে ১৯৭১ সালের মুজিবনগর সরকার জামায়াতসহ ছয়টি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ১৯৭১ সালের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় জামায়াতও এর আওতায় পড়ে।//
বাংলাদেশের বিরোধিতা ও গণহত্যায় সহায়তার জন্য ১৯৭৩ সালে যে ৩৮ জনের নাগরিকত্ব বাংলাদেশ সরকার বাতিল করেছিলো গোলাম আজমও ছিলেন তার একজন।
বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ববহুদলীয় গনতন্ত্র প্রবর্তন করেন আবার জামায়াতকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ করে দেন। জিয়ার সরকার রাজনৈতিক দল সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনায়, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশে জামায়াত ইসলামীর আবার পুনরুজ্জীবন ঘটে। ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ বা আইডিএল থেকে নেতাকর্মীরা জামায়াতে ফেরেন। সেই সুযোগে গোলাম আযম ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরে দলের আমির হন। কিন্তু নাগরিকত্ব না থাকায় তা গোপন রাখা হয়। ভারপ্রাপ্ত আমির হন আব্বাস আলী খান। //
পরে ১৯৯২ সালেই জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হন গোলাম আযম। ১৯৯৪ সালে উচ্চ আদালত তাঁকে নাগরিকত্ব দেন।
২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় গেলে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মন্ত্রিত্ব পান। স্বাধীন বাংলাদেশে এটাই জামায়াতের প্রথম সরকারে অংশগ্রহণ।
২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পাওয়ার জন্য ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয় এবং গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংস্কার করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দুটি আসন পায় জামায়াত। এরপর তারা আর কোনো ভোটে অংশ নিতে পারেনি।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১শে জুলাই জামায়াতে ইসলামীকে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
আজ এই পর্যন্তই!
ভিডিওটিতে লাইক দিন,share করুন এবং এইরকম ভিডিও আরো পেতে চাইলে চ্যানেলটি subscribe করে আমাদের সাথে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন