১৩ টি ব্যাংক মাত্রাতিরিক্ত ঋণ বিতরন করায় গ্রাহকদের জমানো টাকা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আজকের পত্রিকায় এই ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এই ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি আনিস খান বলেন, সীমা অতিক্রম করে ঋণ বিতরণ করলে ব্যাংকের আমানত ঝুঁকিতে থাকবে। এডিআরের নীতিমালা অমান্য করলে ব্যাংকের কমপ্লায়েন্স লঙ্ঘিত হবে। আগ্রাসী ঋণ বিতরণ করলে তা আদায়ে সমস্যা দেখা দেবে।
এডিআর কি? অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিওর সংক্ষেপ হলো এডিআর। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিমালা অনুযায়ী যে কোন ব্যাংককে বেধে দেয়া ঋণ বিতরণের নির্ধারিত সীমা (এডিআর)। যেই সীমার চেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোনভাবেই বেশি ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিমালা অনুযায়ী, প্রচলিত ধারার ব্যাংক ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা এবং ইসলামি ধারার ব্যাংক ৯২ টাকা ঋণ দিতে পারে। একে ব্যাংকিং পরিভাষায় এডিআর বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা বলা হয়।//
কোন ব্যাংক এডিআর সীমা লঙ্ঘন করলে হস্তক্ষেপের সুযোগ ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেখানে শৈথিল্য দেখিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের শৈথিল্যই এর কারণ। এইভাবেই অনুমোদিত সীমার বেশি ঋণ বিতরণ করে ফেঁসে গেছে সরকারি-বেসরকারি খাতের ১৩ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ এর জুন পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনা থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জনগণের কাছ থেকে আমানত তুলে এসব ব্যাংক বেশি লাভের আশায়, যাকে-তাকে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে। এতে ভেঙে পড়েছে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের নির্ধারিত সীমা বা অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) শৃঙ্খলা।তবে শঙ্কা এবং ভয়ের খবর হচ্ছে, চেষ্টা করেও ওই ঋণ ব্যাংকের ভল্টে ফেরানো যাচ্ছে না।
এদিকে ঋণ আদায় না হওয়ায় বেশির ভাগ ব্যাংক এখন liquid money বা তারল্যসংকটের ভুগছে। এতে আমানতকারীর সঞ্চিত অর্থ ফেরত পাওয়ায় যেমন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, তেমনি ব্যাংকগুলোও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের অন্য ব্যাংকগুলো এই অবস্থা থেকে শিক্ষা নিতে পারে। //
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, প্রচলিত ধারার ন্যাশনাল ব্যাংক সীমার চেয়ে ১৭ টাকা বেশি ঋণ দিয়েছে। এতে ন্যাশনাল ব্যাংকের এডিআর সীমা দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৬৪ শতাংশে। এ বাস্তবতায় ব্যাংকটি এখন গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছে। পদ্মা ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৯১ দশমিক ৪১ শতাংশ। সীমার বেশি ঋণ দিলেও ব্যাংকটি এখন তা আদায় করতে পারছে না। আবার গ্রাহকের টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। এভাবে যে সমস্ত ব্যাংক ঋণ দিয়ে বিপদে পড়েছে সেই ব্যাংকগুলো হলো
সরকারি ব্যাংক হিসেবে আছে ১৩) জনতা ব্যাংক। বাকীগুলো সব বেসরকারি ব্যাংক
১) এবি ব্যাংকের ২) বেসিক ব্যাংক ৩) ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ৪) ইউনিয়ন ব্যাংক ৫) স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ৬) গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৭) ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৮) সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ৯) এক্সিম ব্যাংক ১০) বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ১১) ন্যাশনাল ব্যাংক ১২) পদ্মা ব্যাংক
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত এডিআর তদারক করে। সীমা লঙ্ঘন করলে জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হয়।
কিন্তু ১৩ টি ব্যাংকের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বিগত সরকারের সময়ে উদাসীন থেকেছে। একজন বিজ্ঞ ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন বাংলাদেশ যাতে আস্তে আস্তে দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিনত হয় এবং অর্থনৈতিক ভাবে গ্রাহক ও রাষ্ট্র নিস্ব হয় সেজন্যই এইসব করা হয়েছে। আমরা আশা করব প্রফেসরের ইউনুসের সরকার এই সমস্থ অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে যাতে ভবিষ্যতে আর কোন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে না যায়।
আজ এই পর্যন্তই!
ভিডিওটিতে লাইক দিন,share করুন এবং এইরকম ভিডিও আরো পেতে চাইলে চ্যানেলটি subscribe করে আমাদের সাথে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন