রাজনৈতিক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রাজনৈতিক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

ড.ইউনুস বিচারের জন্য হাসিনাকে ফেরত আনার ব্যাপারে যা বললেন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুস বলেন, জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের প্রতিটি হত্যার বিচার করা হবে।

গণআন্দোলনের মুখে পলায়ন  করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।


প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই। জুলাই-অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, তার কাজও বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব।”


কেবল দেশেই নয়, গুম, খুন ও জুলাই-অগাস্ট গণহত্যার সাথে জড়িতদের আমরা আন্তর্জাতিক আদালতেও বিচারের উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের প্রধান কৌঁসুলি করিম খানের সঙ্গে আমার এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে কথা হয়েছে।”


জাতির উদ্দেশে তার চতুর্থ ভাষণে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত সব অপকর্মের বিচার করার কথাও বলেন ইউনূস।//


তিনি বলেন, “কেবল জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডই নয়, আমরা গত ১৫ বছরে সব অপকর্মের বিচার করব। অসংখ্য মানুষ গুম হয়েছে, খুন হয়েছে এই সময়ে। আমরা গুমের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছি। কমিশন প্রধান আমাকে জানিয়েছেন, অক্টোবর পর্যন্ত তারা ১,৬০০ গুমের তথ্য পেয়েছেন। তাদের ধারণা এই সংখ্যা ৩,৫০০ ছাড়িয়ে যাবে।”


পরে আক্রান্ত হতে পারেন, এই ভয়ে অনেকে কমিশনের কাছে গুমের অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।

 

তিনি গুমের শিকার পরিবারগুলোকে বলেন,

“আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা দ্বিধাহীন চিত্তে কমিশনকে আপনাদের অভিযোগ জানান। কারো সাধ্য নেই আপনাদের গায়ে আবার হাত দেয়,” অভয় দিয়ে বলেন তিনি।


গুম কমিশনে যেসব অভিযোগ জমা পড়েছে, তার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “গুম কমিশনের সদস্যদের কাছে ভুক্তভোগীদের যে বিবরণ আমরা পেয়েছি তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। জুলাই-অগাস্টের বিপ্লবের পর ছাত্রছাত্রীরা শহর বন্দরের দেয়ালে-দেয়ালে তাদের মনের কথা লিখেছে। তাদেরও আগে যারা গুমের শিকার হয়েছে, প্রতিটি গোপন আস্তানার দেয়ালে-দেয়ালে তারা লিখে গেছেন তাদের কষ্টের মর্মস্পর্শী বিবরণ। তাদের এসব কষ্টের কথা শুনে আমাদের হৃদয় কেঁপে উঠেছে।//


“এসবের সঙ্গে জড়িতদের আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবই। অভিযুক্ত যতই শক্তিশালী হোক, যে বাহিনীরই হোক তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 


ইউনূস বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কোনো সদস্য কিংবা অন্য কেউ যাতে হত্যা, গুমসহ এ ধরনের কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য আমরা গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছি। আপনারা দেখেছেন, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফলকার তুর্ক সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন।


মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ”বিপ্লব চলাকালে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-শ্রমিক জনতার শহীদী মৃত্যু হয়। সরকার প্রতিটি মৃত্যুর তথ্য অত্যন্ত যত্নের সাথে জোগাড় করছে। এই বিপ্লবে আহত হয়েছে ১৯,৯৩১ জন। আহতদের জন্য ঢাকার ১৩টি হাসপাতালসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”


“জাতিসংঘ জুলাই-অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তারা আমাদেরকে তাদের রিপোর্ট হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অতীতের গুমের ঘটনাগুলোর তদন্ত কাজেও আমরা নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। মানবাধিকার রক্ষায় সহযোগিতা করতে ঢাকায় তারা তাদের জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছি।”


আজ এই পর্যন্তই!


ভিডিওটিতে  লাইক দিন,share করুন এবং এইরকম ভিডিও আরো  পেতে চাইলে চ্যানেলটি subscribe করে আমাদের সাথে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।


শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত ইসলামী কখন রাজনীতি করার সুযোগ পায়? এবং কে দেন সেই সুযোগ?

১৯৪১ সালের ২৬ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয়। লাহোরের ইসলামিয়া পার্কে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন ভারতের ধর্মীয় রাজনীতিক আবুল আলা মওদুদী । তখন দলটির নাম ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ বা জামায়াতে ইসলামী ভারত।   পরের বছর জামায়াতের সদর দপ্তর লাহোর থেকে ভারতের পাঠানকোটে নেয়া হয়। 


১৯৪৫  সালে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ এর প্রথম কনভেনশন হয় অবিভক্ত ভারতে এবং এর দু'বছর পর দেশভাগের আগ পর্যন্ত এই সংগঠনটি ১৯৪৭ সালে ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে  পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলো।

পাকিস্তান সৃষ্টির পর দলটির প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী ভারত থেকে পাকিস্তানে চলে যান। //


বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে ১৯৫৮ সালে অন্য সব দলের সাথে পাকিস্তানে জামায়াতের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করেন তখনকার সেনা শাসক আইয়ুব খান। 


 মুসলিম পারিবারিক আইন ও শিক্ষা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেয় দলটি।

বিশেষ করে মুসলিম পারিবারিক আইন নিয়ে তুমুল সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতাও তৈরি হয়। অধ্যাদেশের বিরোধিতার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতকে আবার নিষিদ্ধ করে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।

মওদুদী ও গোলাম আজমসহ অনেককে আটক করা হয়। একই বছরের অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ১৫১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র চারটি আসন পায় দলটি।


মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে ১৯৭১ সালের মুজিবনগর সরকার জামায়াতসহ ছয়টি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ১৯৭১ সালের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় জামায়াতও এর আওতায় পড়ে।//


বাংলাদেশের বিরোধিতা ও গণহত্যায় সহায়তার জন্য ১৯৭৩ সালে যে ৩৮ জনের নাগরিকত্ব বাংলাদেশ সরকার বাতিল করেছিলো গোলাম আজমও ছিলেন তার একজন। 


বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট  জিয়াউর রহমান  ববহুদলীয় গনতন্ত্র প্রবর্তন করেন আবার জামায়াতকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ করে দেন।  জিয়ার সরকার রাজনৈতিক দল সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনায়, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশে জামায়াত ইসলামীর আবার পুনরুজ্জীবন ঘটে। ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ বা আইডিএল থেকে নেতাকর্মীরা জামায়াতে ফেরেন। সেই সুযোগে গোলাম আযম ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরে দলের আমির হন। কিন্তু নাগরিকত্ব না থাকায় তা গোপন রাখা হয়। ভারপ্রাপ্ত আমির হন আব্বাস আলী খান। //


পরে ১৯৯২ সালেই জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হন গোলাম আযম। ১৯৯৪ সালে উচ্চ আদালত তাঁকে নাগরিকত্ব দেন। 


২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় গেলে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মন্ত্রিত্ব পান। স্বাধীন বাংলাদেশে এটাই জামায়াতের প্রথম সরকারে অংশগ্রহণ।



২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পাওয়ার জন্য ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয় এবং গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংস্কার করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দুটি আসন পায় জামায়াত। এরপর তারা আর কোনো ভোটে অংশ নিতে পারেনি।


সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১শে জুলাই জামায়াতে ইসলামীকে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে  নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। 


আজ এই পর্যন্তই!


ভিডিওটিতে  লাইক দিন,share করুন এবং এইরকম ভিডিও আরো  পেতে চাইলে চ্যানেলটি subscribe করে আমাদের সাথে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।